মাতৃভাষা দিবস কি? আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

মাতৃভাষা দিবস কি? আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস

 

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হলো প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি পালিত করা হয়। এই দিনটি মাতৃভাষার গুরুত্ব এবং মৌলিক অধিকারের সম্মানে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি মূলত মাতৃভাষার মূল্যবোধ, ভাষা সংরক্ষণ, ভাষা শিক্ষা, এবং ভাষার বিকাশের উপলক্ষ্যে পালিত হয়। এই দিনটি বিশেষভাবে আন্তর্জাতিক ভাষা সমূহের প্রচার এবং প্রচেষ্টা করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হয়। এই উৎসবের মাধ্যমে মানবিক মূল্যের অনুরক্তি এবং ভাষার ঐক্য ও সম্পর্ক উত্থান করা হয়। এই উদ্যোগের মাধ্যমে ভাষার সংরক্ষণ, সংরক্ষণ, এবং উন্নতি করা হয়, যা আন্তর্জাতিক সম্পর্কে অপরিহার্যভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কি?

আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হলো একটি উৎসব যা প্রতি বছর ২১শে ফেব্রুয়ারি পালিত করা হয়। এই দিনটি মাতৃভাষার প্রতি সম্মান এবং মৌলিক অধিকারের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটি মূলত মাতৃভাষার মূল্যবোধ, ভাষা সংরক্ষণ, ভাষা শিক্ষা, এবং ভাষার বিকাশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ উপলক্ষ্য নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়। এই দিনটি প্রথম পালিত হয় ১৯৫২ সালে, এবং এর উদ্দেশ্য ছিল মাতৃভাষা এবং সাংস্কৃতিক গঠনের মানবিক মূল্যের অনুরক্তি বাড়াতে। এই উৎসবটি প্রচলিত রূপে পাওয়া যায় সর্বাধিক ভাষাগুলির ব্যবহারকারী দেশগুলিতে, যেমন বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, সিরিয়া, এবং নেপালে। এই দিনটি বিশেষভাবে আন্তর্জাতিক ভাষা সমূহের প্রচার এবং প্রচেষ্টা করার জন্য একটি অভিযানের হিসাবে পালিত হয়।

কিভাবে মাতৃভাষা দিবস আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়?

মাতৃভাষা বাংলার জন্য আমাদের আত্মত্যাগের স্মৃতিকে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিয়েছে জাতিসংঘ। ১৯৯৮ সালে কানাডা প্রবাসী রফিক ও সালাম তাদের প্রতিষ্ঠিত দ্যা মাদার ল্যাঙ্গুয়েজ লাভার অব দ্যা ওয়ার্ল্ড সংগঠনের মাধ্যমে একুশে ফ্রেবুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে পালনের আবেদন জানান জাতিসংঘের তৎকালীন মহাসচিব কফি আনানের কাছে। পরে বিষয়টি বাংলাদেশ ইউনেস্কো জাতীয় কমিশন ও তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী প্রয়াত এ এস এইচ কে সাদেককে বিষয়টি অবহিত করেন। শিক্ষামন্ত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে অবহিত করলে তিনি এ বিষয়ে খুবই উৎসাহিত হন এবং জরুরি ভিত্তিতে প্রস্তাবটি ইউনেস্কোর অধিবেশন শুরু হওয়ার আগেই তার সদর দপ্তরে পৌঁছানোর নির্দেশ দেন। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রীর এই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের কারণেই প্রস্তাবটি যথাসময়ে ইউনেস্কোর সদর দপ্তরে পাঠানো সম্ভব হয়। ১৯৯৯ সালে ১৭ই নভেম্বর ইউনেস্কোর প্যারিস অধিবেশনে একুশে ফেব্রুয়ারিকে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই ত্বরিৎ সিদ্ধান্তের জন্য বাঙালি জাতি চিরদিন তার কাছে কৃতজ্ঞ থাকবে। আর এভাবেই মাতৃভাষা দিবস আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি পায়।

মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন

মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন হলো মানুষের নিজস্ব ভাষার সম্মান এবং সংরক্ষণের জন্য চলাচলনা বা প্রতিষ্ঠান। এই আন্দোলনের লক্ষ্য হলো মাতৃভাষা ও সাংস্কৃতিক পরম্পরার সংরক্ষণ, প্রচার এবং বিকাশ করা। মাতৃভাষা আমাদের সাংস্কৃতিক পরিচয়, পরিচ্ছেদ এবং ব্যক্তিগত সংশ্লিষ্টতা নির্ধারণ করে। একটি মাতৃভাষা হলো একটি জনগণের আত্মবিশ্বাস ও সাংগঠনের মূল উপাদান।

মাতৃভাষার জন্য আন্দোলন প্রকাশ্যে বিভিন্ন রূপে দেখা যায়। এটি হতে পারে সামাজিক অভিযান, সাংস্কৃতিক আন্দোলন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম, রাজনৈতিক কর্মসূচি, সাংস্কৃতিক সংস্থা বা সংগঠনের মাধ্যমে এবং অন্যান্য উপায়ে। এই আন্দোলনের মাধ্যমে মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধি করা হয় এবং মাতৃভাষা সম্পর্কে গভীর বিচার এবং প্রেম বৃদ্ধি করা হয়।

১৯৫২ সালে ভাষা আন্দোলন বাংলাদেশের ঐতিহাসিক একটি ঘটনা যা ভাষার প্রতি মানুষের অধিকার ও স্বাধীনতা নিয়ে একটি মুখোমুখি সংঘর্ষের উদাহরণ। এই ঘটনায় মানুষের অধিকার এবং স্বাধীনতার লড়াইয়ের জন্য অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।

১৯৫২ সালের ২১শে ফেব্রুয়ারি, ভাষা আন্দোলনের প্রধান কারণ ছিল উত্তর ভারতে ভাষা প্রশাসন নীতির বিরুদ্ধে ভাষার প্রতি প্রতিষ্ঠিত হোক অধিকারের প্রতি কম্পন। তবে, এটি পূর্ব পাকিস্তানের পরিচালনায় নীতির বিরুদ্ধে অভিযানের সুরূ হয়েছিল যা পরিণত হয়েছিল অসংখ্য অস্থায়ী ও সাধারণ মানুষের উত্তেজনা ও প্রতিক্রিয়ায়।

এই আন্দোলনে অংশগ্রহণের ফলে ২১শে ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের জাতীয় ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছিল। এটি একটি ঐতিহাসিক উদাহরণ যা মানুষের ভাষার প্রতি অধিকার এবং স্বাধীনতা নিয়ে লড়াইয়ের প্রতি অধিকার স্বীকার করে। ভাষা আন্দোলনের ফলে বাংলা ভাষা অবশ্য একটি প্রাধান্য ভাষা হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছে এবং এটির ব্যবহার সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের অধিকাংশ ক্ষেত্রে সম্ভব হয়েছে।

ভাষা আন্দোলনের ফলে পাকিস্তানী শাসন শীঘ্রই বাংলা ভাষার প্রতি সম্মান এবং ভাষার উন্নতির প্রতি আদর্শ বিন্যাস করে নেওয়া হয়। এটি একটি ঐতিহাসিক ঘটনা ছিল যা বাংলাদেশের স্বাধীনতার পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ খেলে।

একুশে ফেব্রুয়ারির দিনটিতে যা ঘটেছিল

একুশে ফেব্রুয়ারি হলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও ভাষা আন্দোলনের স্মরণীয় দিন। এই দিনটি মুক্তিযুদ্ধের আগেই বাংলাদেশের মানুষের ভাষার সম্মান ও অধিকার নিয়ে লড়াইয়ের অধিকার প্রতীক হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছিল।

২১শে ফেব্রুয়ারি ১৯৫২ সালে, পূর্ব পাকিস্তানের শাসনাধীন ভারতে উত্তর পূর্ব প্রদেশে ভাষা প্রশাসনের বিরুদ্ধে সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের বিরোধে আন্দোলন প্রারম্ভ হয়। এই আন্দোলনে অংশগ্রহণের ফলে শহীদ সালাম, শহীদ বারকত, শহীদ রাফিক, শহীদ জহুরুল, এবং অনেক অন্যান্য প্রাণ হারিয়েছেন।

এই ঘটনার পরিণতি হিসেবে ২১শে ফেব্রুয়ারি জাতীয় ভাষা দিবস হিসাবে পালিত হয়। এই দিনটি একটি ঐতিহাসিক উদাহরণ যা মানুষের ভাষার প্রতি অধিকার ও স্বাধীনতা নিয়ে লড়াইয়ের প্রতি অধিকার স্বীকার করে। এই দিনটিতে বিভিন্ন কর্মসূচি পরিচালনা হয়, সাধারণ মানুষের মধ্যে জাগরুকতা বাড়ানো হয়, এবং স্মৃতি ও গভীর ভাবে ভাষা আন্দোলনের প্রাণাধিক্য মনে করা হয়।

শেষ কথা

মাতৃভাষার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন, এর সুরক্ষা, বিকাশ ও অবাধ চর্চার মাধ্যমে আমাদের গৌরবময় অগ্রযাত্রাকে অব্যাহত রাখতে হবে। আমাদের দেশে বাংলা ছাড়াও অনেক ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাতৃভাষা রয়েছে। তাদের মাতৃভাষার বিকাশেও আমাদের সদা সচেতন থাকতে হবে। খেয়াল রাখতে হবে তাদের প্রাণপ্রিয় এসব ভাষা যেন অনাদরে হারিয়ে না যায়। আসুন সবাই মিলেই মাতৃভাষার উন্নয়নে ব্রতী হই। উদ্যোগী হই। বিশ্ববাসীর কাছে বিশেষ এক উদাহরণ সৃষ্টি করি।

Related posts

Leave a Comment